কেড়কেড়া৷ মণিপুরিদের আকাশ প্রদীপ৷ কার্তিক মাস জুড়ে মৈতৈ ও বিষ্ণুপ্রিয়া বৈষ্ণবরা সন্ধ্যা হলে বাঁশের মাথায় বসানো লন্ঠন প্রজ্বলন করে বিষ্ণুর আশির্বাদ কামনা করে৷ উচ্চারণ করা হয় এই মন্ত্র- 'আকাশে সলক্ষ্মীক বিষ্ণোস্তোষার্থং দীয়মানে প্রদীপঃ শাকব তৎ।' অর্থাৎ, আকাশে লক্ষ্মীর সঙ্গে অবস্থান করছেন যে বিষ্ণু, তাঁর উদ্দেশে দেওয়া হল এই প্রদীপ।
যারা বৈষ্ণব নন, আপোকপা ধর্মানুসারী, তারা বলেন এই প্রদীপটি লক্ষী-নারায়ণের উদ্দেশে নিবেদিত নয় বরং আপোকপা বা পূর্বপুরুষদের স্মরণে প্রজ্জ্বলন করা হয়, যারা পরলোকে আছেন তারা যেন সেই আলোর রেখা ধরে নিকটজনদের আশীর্বাদ করতে পারেন৷ কৃত্যানুষ্ঠানটির নাম 'মেরা ৱাউংবা', মেরা হচ্ছে মণিপুরি বর্ষপঞ্জির সপ্তম মাস৷
যুক্তিবাদীরা বলেন, আকাশে দীপ জ্বালানো হেমন্তকাল বরনের অংশ৷ শীতের আগমনের প্রস্তুতি হিসাবে আগুন বা তাপকে সংরক্ষণ করে রাখার একটা প্রতীকি উৎযাপন যা সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে৷
মণিপুরি পুরাণগুলোতে অবশ্য এই আকাশ প্রদীপের ভিন্ন গল্প আছে৷ সুদুর অতীতের কোন এক সময়ে তিনজন ভাই বসতি গড়ার জন্য পাহাড়ে উঠে ৷ ছোট ভাইটি কিছুদুর এগিয়ে আর উঠতে পারে না, সেখানেই থেকে যায়৷ বড় ভাইয়েরা পাহাড়ে উঠে বসতি গড়ে তোলে৷ যাবার আগে তারা ছোটভাইকে বলে যায়, বছরের মাঝামাঝি এই সময়টাতে সে যেন উচুঁ বাঁশের মাথায় লন্ঠন জ্বালিয়ে রাখে, যাতে ছোট ভাই ঠিক আছে কিনা তারা জানতে পারে৷ তারপর থেকে এটা মণিপুরের ঐতিহ্য হয়ে যায়৷ এই কাহিনীটি মণিপুর উপত্যকার পাহাড় ও সমতলে বাস করা ৩০টির বেশি ছোট ছোট জাতির মধ্যে ভ্রাতৃত্বের কথা বলে৷ মণিপুর রাজ্যে এই উৎসবটি উৎযাপিত হয় তাদের মধ্যকার বন্ধন যে দৃঢ় সেটা দেখাতে৷
যে যাই বলুক, কার্তিক মাসে আকাশ প্রদীপ দেখলে লতার এই গানটির কথাই মনে পড়ে—
'আকাশ প্রদীপ জ্বলে দূরের তারার পানে চেয়ে,
আমার নয়ন দু’টি শুধুই তোমারে চাহে
ব্যথার বাদলে যায় ছেয়ে।।'
২৮ অক্টোবর, ২০১৭
3 comments:
Best content & valuable as well. Thanks for sharing this content.
Approved Auditor in DAFZA
Approved Auditor in RAKEZ
Approved Auditor in JAFZA
i heard about this blog & get actually whatever i was finding. Nice post love to read this blog
Approved Auditor in DMCC
Virgin Linseed Oil BP
বাংলা নিউজ
দেশ বিদেশ ভ্রমণ সংক্রান্ত সকল তথ্য ও পরামর্শ এর জন্য
Post a Comment