কাল থেকে শুরু হবে মণিপুরীদের বর্ণাঢ্য বিষু উৎসব। বাংলাদেশের
মৌলবীবাজার, সিলেট, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ জেলার মণিপুরী বসতিগুলোতে চৈত্র
মাসের শেষ দিন থেকে সাতদিন ব্যাপী এই উৎসব পালিত হয়। এই উৎসবের মাধ্যমে
পুরাতন বছরকে বিদায় এবং নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হয়। সংস্কৃত "মহাবিষুব"
শব্দ হতে "বিষূ" শব্দটির উৎপত্তি বলে ধারন করা হয়। কারো কারো মতে "দ্বিষু"
অর্থ্যাৎ যেদিন বিষুবরেখা সূর্যালোক দ্বারা দ্বিধাবিভক্ত হয় সেই দিনটি
বিষু। যাহোক মণিপুরী বিষ্ণুপ্রিয়ারা যে দিনটিকে "বিষু" বা "চেরৌ" হিসাবে
পালন করে, মণিপুরী মৈতৈদের কাছে সেদিনটি "শাজিবু চৈরাউবা", চাকমাদের কাছে
"বিঝু", মারমাদের নিকট "সাংগ্রাই", ত্রিপুরাদের "বৈসুক" এবং অসমীয়াদের
"বিহু" এবং বাঙালীদের কাছে "চৈত্র সংক্রান্তি"।
বছরের শেষ দিনটিতে মণিপুরীরা সুর্যোদয়ের আগেই ঘরদোর, ঘরের চারপাশ এবং ঘরের যাবতীয় ব্যবহার্য বস্ত্রআসবাবপত্র পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ সেরে ফেলে। স্নানের পর রান্নাবান্না শুরু হয়। শুধুমাত্র নিরামিষ রান্না অসংখ্য পদের। এরপর লৌকিক দেবতা "আপোকপা" এবং কুলদেবতা "লামরদৌ"এর উদ্দেশ্যে ভোগ নিবেদনের পর চলে সম্প্রীতির নিদর্শন হিসাবে ঘর থেকে ঘরে রান্না করা খাবার বিনিময়ের পালা। সন্ধ্যায় তৈরী হয় নানান জাতের পিঠা। মণিপুরী লেইসাঙ বা মন্দিরগুলো আরতি, পালা, কীর্তন ও মৃদঙ্গের শব্দে মুখরিত হয়ে উঠে। কোথাও কোথাও বসে ঐতিহ্যবাহী নৃত্য এবং গানের আসর। রাতভর চলে তরুণ তরুনীদের ঐতিহ্যবাহী নিকন (বিশেষ ধরনের পাশা), গিল্লা, লাকাটি ইত্যাদি নানান খেলা।
বিষুর আভিধানিক অর্থ সাম্য বা সমতা। দিনরাত্রির দৈর্ঘ্যের সমতা মনিপুরী জীবনধারায় এসে সামাজিক সংহতি ও সাম্যের রূপ নিয়েছে। বিষু সবার দু:খ-কস্ট আনন্দ-বেদনা হতাশা-বঞ্চনা ভাগাভাগি করার দিন। ভারতবর্ষের পশ্চিমে পাঞ্জাবে "বৈশাখী" উৎসব, দক্ষিনে কেরালায় গিয়ে "ভিজু", এরপর দেড়হাজার কিলোমিটার পথ পেরিয়ে বাঙালীর "চৈত্র সংক্রান্তি", আসামে এসে অসমীয়াদের "বিহু", মণিপুরী বিষ্ণুপ্র্রিয়াদের "বিষু", চাকমাদের নিকট "বিঝু" এবং ত্রিপুরীদের নিকট "বৈসুক" হবার নেপথ্যে কারণ কি কাকতালমাত্র? তবে কি সুদুর অতীতে ইতিহাসের কোন এক সময়ে এইসব জাতিগোস্টির পুর্বপুরুষদের মধ্যে কোনরূপ পারস্পরিক নৈকট্য বা যোগাযোগ ছিল?
লৌকিক দেবতার উদ্দেশ্যে ভোগ
লৌকিক দেবতার উদ্দেশ্যে প্রার্থনা
বিষূর দিনে বিভিন্ন পদের রান্না
বিষুর দিনে মণিপুরী নৃত্য ও সংগীতের আসর
মণিপুরী মন্দিরে পালাকীর্ত্তনের আসর
ঐতিহ্যবাহী নিকন খেলা নিয়ে রাজকুমার চন্দ্রজিৎ সিংহের পেইন্টিং
বছরের শেষ দিনটিতে মণিপুরীরা সুর্যোদয়ের আগেই ঘরদোর, ঘরের চারপাশ এবং ঘরের যাবতীয় ব্যবহার্য বস্ত্রআসবাবপত্র পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ সেরে ফেলে। স্নানের পর রান্নাবান্না শুরু হয়। শুধুমাত্র নিরামিষ রান্না অসংখ্য পদের। এরপর লৌকিক দেবতা "আপোকপা" এবং কুলদেবতা "লামরদৌ"এর উদ্দেশ্যে ভোগ নিবেদনের পর চলে সম্প্রীতির নিদর্শন হিসাবে ঘর থেকে ঘরে রান্না করা খাবার বিনিময়ের পালা। সন্ধ্যায় তৈরী হয় নানান জাতের পিঠা। মণিপুরী লেইসাঙ বা মন্দিরগুলো আরতি, পালা, কীর্তন ও মৃদঙ্গের শব্দে মুখরিত হয়ে উঠে। কোথাও কোথাও বসে ঐতিহ্যবাহী নৃত্য এবং গানের আসর। রাতভর চলে তরুণ তরুনীদের ঐতিহ্যবাহী নিকন (বিশেষ ধরনের পাশা), গিল্লা, লাকাটি ইত্যাদি নানান খেলা।
বিষুর আভিধানিক অর্থ সাম্য বা সমতা। দিনরাত্রির দৈর্ঘ্যের সমতা মনিপুরী জীবনধারায় এসে সামাজিক সংহতি ও সাম্যের রূপ নিয়েছে। বিষু সবার দু:খ-কস্ট আনন্দ-বেদনা হতাশা-বঞ্চনা ভাগাভাগি করার দিন। ভারতবর্ষের পশ্চিমে পাঞ্জাবে "বৈশাখী" উৎসব, দক্ষিনে কেরালায় গিয়ে "ভিজু", এরপর দেড়হাজার কিলোমিটার পথ পেরিয়ে বাঙালীর "চৈত্র সংক্রান্তি", আসামে এসে অসমীয়াদের "বিহু", মণিপুরী বিষ্ণুপ্র্রিয়াদের "বিষু", চাকমাদের নিকট "বিঝু" এবং ত্রিপুরীদের নিকট "বৈসুক" হবার নেপথ্যে কারণ কি কাকতালমাত্র? তবে কি সুদুর অতীতে ইতিহাসের কোন এক সময়ে এইসব জাতিগোস্টির পুর্বপুরুষদের মধ্যে কোনরূপ পারস্পরিক নৈকট্য বা যোগাযোগ ছিল?
লৌকিক দেবতার উদ্দেশ্যে ভোগ
লৌকিক দেবতার উদ্দেশ্যে প্রার্থনা
বিষূর দিনে বিভিন্ন পদের রান্না
বিষুর দিনে মণিপুরী নৃত্য ও সংগীতের আসর
মণিপুরী মন্দিরে পালাকীর্ত্তনের আসর
ঐতিহ্যবাহী নিকন খেলা নিয়ে রাজকুমার চন্দ্রজিৎ সিংহের পেইন্টিং